সন্তানহারা বাবা-মাকে অপমান! মাইলস্টোন স্কুলে প্রবেশে বাধা, ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা
📝 সন্তানহারা বাবা-মা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রবেশ করতে গিয়ে নিরাপত্তা প্রহরীদের বাধা ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। বিমান দুর্ঘটনায় সন্তান হারানো এসব অভিভাবক কেন স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের শিকার হলেন, তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান দুর্ঘটনায় সন্তান হারানো বাবা-মা এখন নতুন এক ট্র্যাজেডির শিকার। মাত্র ২৬ দিন আগে প্রাণ হারানো প্রিয় সন্তানের জন্য শোকে কাতর এসব অভিভাবকদের স্কুলে প্রবেশেই বাধা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, নিরাপত্তা প্রহরীদের মাধ্যমে তাদের ‘হেনস্তা’ করা হয়।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে প্রায় ১৫-২০ জন সন্তানহারা বাবা-মা ৮ দফা দাবি নিয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে যান। কিন্তু প্রবেশদ্বারেই নিরাপত্তা প্রহরীরা জানান, ‘ভেতরে প্রবেশের অনুমতি নেই।’ অথচ অভিভাবকরা আগেই অধ্যক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ঠিক করেছিলেন।
অভিভাবকদের হেনস্তা ও ক্ষোভ
নাজিয়া ও নাফির বাবা, রাইসার মা, ফাতেমার মামাসহ উপস্থিত অভিভাবকেরা জানান, সন্তান হারানোর পরও তাদের এভাবে ছোট করা হৃদয়বিদারক। অনেকেই বলেন, ‘আমরা বিচার চাইতে এসেছি, অথচ আমাদের গেটে আটকে অপমান করা হচ্ছে।’
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে অভিভাবকরা ধাক্কাধাক্কি করে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তাদের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে বসানো হলেও অধ্যক্ষ ও উপদেষ্টা হঠাৎ করেই সেখানে অনুপস্থিত হয়ে যান।
অধ্যক্ষ ও উপদেষ্টার অনুপস্থিতি
অভিভাবকরা জানান, স্কুলের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম, উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল নুরন্ নবী ও উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাসুদ আলম সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। কিন্তু তারা গোপনে বের হয়ে যান। এতে অভিভাবকদের ক্ষোভ আরও বাড়ে।
মাইলস্টোন স্কুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল অবশ্য দাবি করেন, ‘আমরা কাউকে বাধা দিইনি। শিক্ষার্থীদের ট্রমার কথা ভেবে কেবল প্রতিনিধিদলকে স্মারকলিপি দিতে বলেছিলাম।’
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ
সন্তানহারা বাবা-মা শুধু দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তই নয়, বরং কোচিং বাণিজ্যেরও বিচার দাবি করেছেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল শাখার প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তার শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক কোচিংয়ে বাধ্য করতেন। নিহত শিক্ষার্থী নাফির বাবা জানান, “আমার মেয়েকে জোর করে কোচিংয়ে ঢোকানো হয়েছিল। ওই কারণে দুর্ঘটনার দিন সে দেরি করেছিল, না হলে হয়তো বেঁচে যেতো।”
অন্য অভিভাবকেরা বলেন, এ কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করলে অনেক শিশু হয়তো আজ জীবিত থাকত।
সরকারের প্রতি অভিভাবকদের আহ্বান
অভিভাবকেরা সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন এই ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত হয়, কোচিং বাণিজ্যে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হয় এবং নিহত পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
২১ জুলাইয়ের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী। এখনো অনেকে চিকিৎসাধীন।
সন্তানহারা বাবা-মা বলেন, “আমরা সন্তানের কবর জড়িয়ে কাঁদছি, অথচ স্কুল প্রশাসন আমাদের অপমান করছে। এর বিচার চাই।” তথ্যসূত্র
📰আরো পড়ুন:☞ গুলশানে সাংবাদিক মুনজুরুল করিমের কফিশপ ভাঙচুর – বৈধ দোকানে অন্যায় অভিযান নিয়ে তোলপাড়