📰 বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে দেশত্যাগ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে ফোন ট্র্যাকিং ও অবস্থান শনাক্তের গোপন অভিযান।
◾সালমান শাহ হত্যা মামলায় ১১ আসামির বিরুদ্ধে ফোন ট্র্যাকিং শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, খুব শিগগির গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হবে। ২৯ বছর পর মামলায় রোমাঞ্চকর নতুন মোড়।
📝 মতিউর মুন্না | বিশেষ প্রতিবেদন : বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা আবারও নতুন মোড়ে দাঁড়িয়ে। দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে চলমান এই রহস্যময় মামলায় এবার শুরু হয়েছে আসামিদের ফোন ট্র্যাকিং ও দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার সব রাস্তায় অবরোধ। রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক নিশ্চিত করেছেন, মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। আর যারা দেশে আছেন, তাদের মোবাইল ফোনের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বাংলা সিনেমার চির তরুণ নায়ক সালমান শাহর মৃত্যু যে আত্মহত্যা নয় বরং সুপরিকল্পিত হত্যা—এই দাবি নতুন করে শক্তিশালী হয়েছে ১১ নম্বর আসামি রেজভী আহমেদ ফরহাদের দেয়া জবানবন্দিতে। ১৯৯৭ সালে আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিতে রেজভী বলেন, “আমরাই সালমান শাহকে হত্যা করেছি। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে সাজানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে সালমান শাহকে হত্যার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন তার শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, সঙ্গে ছিলেন খলনায়ক ডন, প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই এবং আরও কয়েকজন।
🔍 মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে:
১. সামিরা হক (সাবেক স্ত্রী)
২. আজিজ মোহাম্মদ ভাই (প্রযোজক)
৩. খলনায়ক ডন
৪. লতিফা হক লুসি (শাশুড়ি)
৫. ডেভিড
৬. জাভেদ
৭. ফারুক
৮. রুবি (বিউটি সেন্টারের মালিক)
৯. আবদুস সাত্তার
১০. সাজু
১১. রেজভি আহমেদ ফরহাদ
🔸ফোন ট্র্যাকিং শুরু – পুলিশ নিশ্চিত করলো নতুন তথ্য
রমনা থানার ওসি জানান, “কিছু আসামি বিদেশে পালিয়ে আছেন। যারা দেশে আছেন, আমরা তাদের অবস্থান শনাক্ত করছি। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে খুব শিগগির গ্রেপ্তার নিশ্চিত করা হবে।”
এই ঘোষণার পরই দেশজুড়ে নতুন করে আলোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সালমান শাহ ভক্তরা আবেগে আপ্লুত হয়ে ন্যায়বিচার দ্রুত নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন। অনেকেই লিখছেন—“সালমান শাহ শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি প্রজন্মের হৃদয়ের স্পন্দন।”
🔸সালমান শাহ এর মায়ের ২৯ বছরের লড়াই
নায়কের মা নীলা চৌধুরী বলেন, “আমি ছেলেকে হারিয়েছি, রাষ্ট্রকে হারাইনি। বিচার আমার ছেলেরই নয়, বাংলাদেশের আত্মার বিচার।” তার অদম্য সংগ্রামের কারণেই আজ মামলাটি আবার আলোচনায় এসেছে।
🔸হত্যা নাকি আত্মহত্যা – সত্যের মুখোমুখি বাংলাদেশ
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। প্রথমে এটি আত্মহত্যা বলা হলেও পরবর্তীতে একের পর এক প্রমাণ উঠে আসে হত্যার অভিযোগে। এখন প্রশ্ন একটাই—২৯ বছর পর কি সত্য উদঘাটিত হবে?
🔸আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপ
🔹 আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রস্তুত
🔹 বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দর সতর্ক
🔹 ইন্টারপোলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শুরু হতে পারে
🔸জনগণের আবেগ তুঙ্গে
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা বলছেন, “সালমান শাহর মৃত্যু অমীমাংসিত থাকলে দেশের ন্যায়বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা থাকবে না।” অনেকে এই মামলাকে “বাংলাদেশের সবচেয়ে আবেগঘন হত্যামামলা” বলে অভিহিত করছেন।
🔸সালমান শাহ হত্যা মামলা শুধু একটি তারকার মৃত্যুর বিচার নয়, বরং একটি জাতির আবেগ, ন্যায়বিচার ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের লড়াই। ফোন ট্র্যাকিং এবং গ্রেপ্তারের ঘোষণার মাধ্যমে এই মামলার নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। এখন সবার একটাই আশা—
“সালমান শাহের হত্যার বিচার হোক, সত্য প্রকাশ পাক।”
♻️ আরো পড়ুন:☞ আগামী নির্বাচনে তরুণদের বড় ভূমিকা: বিএনপির নতুন প্রার্থী তালিকা যাচাইয়ে তারেক রহমানের নির্দেশ

