📰 জাতিসংঘ বাজেট সংকোচন ও জনবল হ্রাস নীতি, বৈশ্বিক শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের পুরোনো অবদান ঝুঁকিপূর্ণ হয় বলেই অভ্যন্তরীণ উদ্বেগ
- ◾ বাংলাদেশ পুলিশের ১৮০ সদস্যের এফপিইউ কঙ্গো থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহারের নির্দেশ পেয়েছে; ৩০ বছরের শান্তিরক্ষা অবদানের ঐতিহ্য বিপন্ন — বৈশ্বিক শান্তিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ কি কমে যাবে?
📝ডেস্ক রিপোর্ট : কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের একমাত্র অবশিষ্ট ফর্মড পুলিশ ইউনিট-(FPU) প্রত্যাহারের নির্দেশ এসেছে। ১৮০ সদস্যবিশিষ্ট এই ইউনিটের মধ্যে ৭০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসবেন।
এই খবরটি আসে তখন, যখন বাংলাদেশ পুলিশের দীর্ঘদিনের শান্তিরক্ষা অবদান আন্তর্জাতিক মঞ্চে উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে। 🇧🇩 কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অনেককে হতাশ ও উদ্বিগ্ন করেছে কারণ এটি বাংলাদেশ পুলিশের বৈশ্বিক সম্মান ও দেশের কূটনৈতিক সক্ষমতা সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
সিদ্ধান্তের পেছনের প্রেক্ষাপট
ওই FPU ইউনিট আগস্টে কঙ্গো পৌঁছায় এবং ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
জাতিসংঘের নথিতে উল্লেখ রয়েছে, কঙ্গো, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ও দক্ষিণ সুদানের মিশনগুলোতে ধাপে ধাপে সদস্যসংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যাকে পুরো ইউনিটটি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০ অক্টোবরের মধ্যে ১৬২ জন সদস্য দেশে প্রত্যাবাসিত হবে, বাকিরা প্রশাসনিক ও লজিস্টিক কাজ শেষ করে নভেম্বরের মধ্যভাগে ফিরে আসবেন।
প্রতিক্রিয়া ও ব্যতিক্রম
পুলিশের একটি অতিরিক্ত ডিআইজি জানান, “জাতিসংঘ বাজেট সংকোচন ও জনবল কমানোর নীতির কারণে” এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও মৌখিকভাবে কমিশনার রয়েছে তথ্য, আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি এখনও পাওয়া যায়নি যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
পুলিশের অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে, অনেক কর্মকর্তা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু তাদের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য একটি আঘাত হবে। কারণ, এফপিইউ শুধু দায়িত্ব পালন করে না — এটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ও গর্ব।
দীর্ঘদিনের অবদান
২০০৫ সাল থেকে কঙ্গোতে এফপিইউ ইউনিট দায়িত্ব পালন করছে; নারী এফপিইউর ভূমিকা গৌরবের স্মারক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
২০২৫ সালের মে-পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ প্রায় ২১,০০০ এরও বেশি কর্মকর্তা বিশ্বজুড়ে ২৪টি দেশে ২৬টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছে। কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, মধ্য আফ্রিকা এসব দেশের মধ্যে অন্যতম।
ভয়াবহ প্রভাব ও প্রশ্ন
এই সিদ্ধান্ত কি সাময়িক নাকি স্থায়ী?
সরকারের কূটনৈতিক ব্যবস্থা কি যথেষ্ট ছিল? ইউনিসিএফসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় কি করা হয়েছিল?
নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ কমে গেলে কি “লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন” সংক্রান্ত জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রাগুলো পুড়ে যাবে?
শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের “ব্র্যান্ড ভ্যালু” কমে যাবে কি না — যা বহু সময়ের সাফল্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।
আগামী পথ ও সরকারী করণীয়
দ্রুত একটি পাবলিক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা যেতেই পারে যেখানে বাংলাদেশ কিভাবে শান্তিরক্ষা মিশনের কম বাজেটের মধ্যেও অংশগ্রহণ বজায় রাখবে সেটি নির্ধারণ করা হবে।
কূটনৈতিক চ্যানেলে ইউনিসিএফ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা বাড়ানো দরকার যাতে বাংলাদেশের অবস্থান ও অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরা যায়।
গণমাধ্যম ও সর্বসাধারণের মধ্যে দেশপ্রেম ও শান্তিরক্ষা বাহিনীর অবদানের প্রতি সচেতনতা বাড়িয়ে দেয়া গুরুত্বপূর্ণ হবে, যাতে বিদেশি ও অভ্যন্তরীণভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা নিতে উৎসাহিত হয়।
এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি ইউনিটের প্রত্যাহার নয়; এটি সেই বার্তা, যা ভাবাবে — বিগত তিন দশকের সম্মান যেন বাজারে কমে যাচ্ছে। আজকের পরিস্থিতি কি শুধু সময়ের জন্য, নাকি বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা বাহিনী-দর্শন এবং আন্তর্জাতিক অথরিটি বড় করে দেখতে চাই এমন আমাদের প্রত্যেকের জন্য সতর্কতার ঘন্টা? তথ্যসূত্র
♻️ আরো পড়ুন:☞ আপনার মোবাইলেই কীভাবে জানতে পারবেন জমির আসল মালিকানা: এক মিনিটেই যাচাই করুন!

