📰 বাংলাদেশের ছোট ও বড় পর্দার কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডলি জহুর শোবিজ দুনিয়ার চাকচিক্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বাস্তবতা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানালেন। সম্প্রতি একটি বিনোদনভিত্তিক অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আজও শোবিজ অঙ্গনে তাঁর ৩৪ লাখ টাকা পাওনা রয়ে গেছে।
ডলি জহুর বলেন, “পারিশ্রমিক তো আর হিরো, হিরোইনদের মতো পাই না। মার (মা’র) চরিত্রে অভিনয় করে যা পাই, সে টাকাও ঠিকমতো পাইনি।” তিনি আরও জানান, যখন তাঁর স্বামীর ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন চিকিৎসার জন্য পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বহুবার কেঁদেছেন পরিচালকদের কাছে। কিন্তু কেউ তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেননি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ছবি রিলিজ হয়ে গেছে, কিন্তু টাকা পাইনি। এক পরিচালকের কাছে টাকা চাইতে গিয়ে আরেক পরিচালকের সাহায্য চেয়েছি। আমি তো তার কাছেও টাকা পাই, কিন্তু সে ফোনই ধরেনি।”
এই দুঃসহ অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ইন্ডাস্ট্রি থেকে এক কড়ি পয়সাও সাহায্য পাইনি। কেউ কখনও বলেনি, এমন বিপদে ডলিকে অন্তত ১০ হাজার টাকা দিয়ে আসি। ২০১১ সালের পর আমি আর কাজ করিনি।”
ডলি জহুর আরও বলেন, যখন তিনি একেবারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় পড়েছিলেন, তখন সবকিছু ঈশ্বরের ওপর ছেড়ে দেন। “আমি কাউকে বদ দোয়া করি না, কিন্তু টাকাটা যদি আমার হকের হয়, এর বিচার হবেই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নাট্যচক্রের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন ডলি জহুর। এরপর মামুনুর রশীদের বাংলা থিয়েটারে এবং পরে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে তাঁর অনন্য অবদান রাখেন তিনি।
কিন্তু দীর্ঘ অভিনয় জীবনের শেষপ্রান্তে এসে এই আর্থিক অসহায়তার চিত্র শোবিজ দুনিয়ার অমানবিক দিকটি আবারও সামনে আনল। তাঁর বিশ্বাস, যাদের কাছে তিনি টাকা পাওনা আছেন, একদিন সেই হিসাব হবে—এই আশা নিয়ে তিনি এখনো আশাবাদী।◾