📰 জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ২৩তম দিনে কমিশন জানায়, প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের এবং সদস্যরা মনোনীত হবেন সংখ্যানুপাতিক (Proportional Representation – PR) পদ্ধতিতে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনে দলগুলো যে পরিমাণ ভোট পাবে, সেই অনুপাতে উচ্চকক্ষে তাদের আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তবে এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দল ও জোটগুলো। তারা উচ্চকক্ষে সদস্য মনোনয়নে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোট নয়, বরং আসনের সংখ্যাকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, আলোচনা আজই শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং চূড়ান্ত সনদ দ্রুত দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করব দ্রুত চূড়ান্ত সনদ প্রস্তুত করে আপনাদের হাতে তুলে দিতে। এর ভিত্তিতে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও করা হবে।”
কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চকক্ষের নিজস্ব কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না। তবে, অর্থবিল ব্যতীত অন্য সব বিল নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষে উত্থাপন করতে হবে। উচ্চকক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে পারবে না। এক মাসের বেশি বিল আটকে রাখলে সেটি অনুমোদিত হিসেবে গণ্য হবে।
বিল অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা থাকলেও, উচ্চকক্ষের প্রত্যাখ্যাত বিল সংশোধনের সুপারিশসহ ফেরত যাবে নিম্নকক্ষে। নিম্নকক্ষ তা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ কিংবা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
আজকের আলোচনায় অংশ নেয় ৩০টি রাজনৈতিক দল, যার মধ্যে ছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাসদ ও গণসংহতি আন্দোলন।
যদিও এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে, সিপিবি, বাসদ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উচ্চকক্ষ গঠনের বিরোধিতা করে বলেছে—বর্তমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতায় উচ্চকক্ষের প্রয়োজন নেই।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং আইয়ুব মিয়া। ◾