📝 ইসরায়েলের হামলায় নিহত বলা হলেও ইরানের নিরাপদ ভিলায় আছেন বহু পরমাণু বিজ্ঞানী, যুদ্ধের পর পারমাণবিক প্রোগ্রামে নতুন ধাপের প্রস্তুতি
Motherland24 Desk: মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফের আলোচনায় উঠে এসেছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও তাদের শীর্ষ বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ইসরায়েলের টার্গেট লিস্টে থাকা শতাধিক ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীর মধ্যে অন্তত ১৫ জন জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তারা তেহরানের নিরাপদ এলাকায় লুকিয়ে আছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরায়েলের ১২ দিনের বিমান হামলায় ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি শীর্ষ বিজ্ঞানীদের হত্যা করাই ছিলো মূল লক্ষ্য। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা ইতোমধ্যেই বাসভবন ও কর্মস্থল ছেড়ে তেহরানের গোপন ভিলা এবং দেশের উত্তর উপকূলে চলে যান। ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা আগে পারমাণবিক প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন, তাদের পরিবর্তে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন ব্যক্তিদের যাদের পারমাণবিক প্রোগ্রামের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞরা দ্য টেলিগ্রাফ-কে জানিয়েছেন, নতুন গবেষকরা নিহত বিজ্ঞানীদের কাজ হাতে নিতে প্রস্তুত। পরিস্থিতিকে তারা তুলনা করেছেন—”মৃত মানুষের হাঁটাচলা”—এর সঙ্গে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত গবেষকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান এখনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করেনি এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শন মেনে নেয়নি। যদিও ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পর ইরানের পারমাণবিক প্রোগ্রাম কিছুটা পিছিয়ে গেছে, তবে তারা অন্যত্র থেকে পুনরায় শুরু করতে পারে।
সিএসবিএস নিউজ-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বি-২ বোমারু বিমান ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। প্রতিটি বিমানে ছিল দুটি করে জি-বিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বোমা, যা ভারী বাঙ্কার ধ্বংস করতে সক্ষম। ফোর্দো সাইটটি পাহাড়ের নিচে প্রায় ৩০০ ফুট গভীরে অবস্থিত। এছাড়া নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাতেও যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, হামলার পর আশেপাশের এলাকায় অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া যায়নি। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা স্বীকার করেছে যে হামলা হয়েছে, তবে তারা দাবি করেছে—এটি তাদের উন্নয়নকে থামাতে পারবে না।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক প্রোগ্রাম দুই বছর পিছিয়ে গেছে। কিন্তু তেহরান এই দাবি নাকচ করে দিয়ে জানায়, তারা ফোর্দো সাইটে আগেই হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং কর্মীরা সরে যাওয়ায় বড় ক্ষতি হয়নি। ইরানের পার্লামেন্ট সদস্য মাহদী মোহাম্মাদি বলেছেন, “আমাদের জন্য কিছুই অপ্রত্যাশিত ছিল না।”
মধ্যপ্রাচ্যে এই সংঘাত কেবল ভূরাজনৈতিক চাপই বাড়াচ্ছে না, বরং বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করছে। ইরান কি আবারও গোপনে তাদের প্রোগ্রাম এগিয়ে নেবে, নাকি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থেমে যাবে—তা এখন সময়ই বলবে। তথ্যসূত্র
📰আরো পড়ুন:☞ শেখ মুজিবের ছবি ছাড়া নতুন ১০০ টাকার নোট বাজারে মঙ্গলবার! দেখুন চমকপ্রদ ডিজাইন