নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। নিয়মিত চলে মদ আর ইয়াবা সেবন। মাদকের ব্যবসা করে আঙুল ফুলে কলাগাছ এক সময়ের চোর-ছেঁচড়া, ডাকাত, সন্ত্রাসী আর খুনিরা।
চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া পোমরার ৮ নং ওয়ার্ডের গিরজ ফকির এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব চললেও অদৃশ্য কারণে প্রশাসন নিরব। স্থানীয়রা বলছে, এসব মাদক কারবারীদের থেকে নিয়মিতই ভাগ পায় প্রশাসন, জনপ্রিতিনিধি সহ দলীয় পদধারী হর্তা-কর্তাদের পকেটে। সেজন্যই দেখেও না দেখার মতই থাকে তারা। যেন মুখ থাকতেও বোবা, চোখ থাকিতে অন্ধ ।
পোমরার ঘরে ঘরে পৌছে গেছে মদ, গাজা আর ইয়াবার মরণ ছোবল। বাদ যায়নি ক্লাস সেভেন-এইটে পড়া কিশোর থেকে, কলেজ-ভার্সিটিতে পড়া যুবক, বখাটে থেকে সুশীল, মৃত্যুর পথযাত্রী বৃদ্ধও। টাকার লোভ, ক্ষমতার মোহ আর নিজেদের স্বার্থে সমঝোতার রাজনীতি-কুটনীতিতে বিবেকহারা নির্লজ্জ্ব এসব মুখোশধারী মানুষের কারণে পোমরা আজ এতিম, অসহায়। পোমরার ভবিষ্যত প্রজন্ম আজ মরণ ফাঁদে দিশেহারা।
অভিযোগের তীর মাদকসম্রাজ্ঞী রুবিনীর দিকে। স্থানীয় দোকানদার লিটার মাস্টার বলেন, মাদক সম্রাজ্ঞী রুবিনীর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে মাদক ব্যবসা। সন্ধ্যার আলো নিভে গেলে ঢল নামে একশ্রেণীর নেশায় আশক্ত মানুষদের। পার্শ্ববর্তী শিক্ষার বাতিঘর চুয়েট থেকেও ঢল নামে শতশত যুবকের।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, এই তালিকায় আছে সিএনজি চালক, ট্রাক ড্রাইভার থেকে শুরু করে বখাটে, ব্যবসায়ী, ধনীর দুলাল এবং রাজনীতিতে সম্পৃক্ত তথাকথিত ভদ্রসমাজের মানুষ।
দিদারুল আলম নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেছেন- শুধু রুবিনী নয়, এমন আরও অনেক রুবিনী কিংবা তার চেয়েও বড় মাদক সম্রাট রয়েছে পোমরায় যাদের দাপটে অসহায় স্থানীয়রা। যাদের নাম উঠে আসেনা কখনও। কিংবা তাদের নাম ভয়েও অনেকে মুখে আনতে চায় না।
গোচরা, শান্তিরহাট, মালিরহাট, বাচাঁশাহ নগর, কায়দা আজম, সৌদিয়া গেইট, বুড়ির দোকান, চাইনীপাড়া এলাকায় বিপদগামী নেশাখোর যুবকদের হাত দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা এসব ইয়াবা আর মদ-গাজা বিক্রি করছে তরুন প্রজন্মের কাছে।
পোমরার সাবেক-বর্তমান চেয়ারম্যান-মেম্বার, সমাজপতি, বড় বড় পদবীধারী নেতা আর তথাকথিত রাজনীতির ঠিকাদাররা এই চমৎকার বিনিয়োগ বিহীন ব্যবসার শেয়ারদার আর লাভের ভাগীদার এমনটাই জানা গেছে।
রাঙ্গুনিয়া কলেজের অধ্যাপক মাহমুদ জসিম বলেছেন- জনপ্রতিনিধিদের উচিত ছিল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদের প্রতিরোধ করা। মাদক নির্মুল কমিটি গঠন করা। প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে মদের ব্যবসা গুড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু উল্টো তারাই লোভে অন্ধ হয়ে তাদের যেন সেল্টার দিচ্ছে এবং তাদের সঙ্গে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বয়কটের পরিবর্তে তাদের সামাজিক ভাবে স্বীকৃতির সার্টিফিকেটও দিচ্ছে।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি এটিএম সিফাত মাজদার বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। গোচরা, শান্তিরহাট, মালিরহাট, বাচাঁশাহ নগর, কায়দা আজম, সৌদিয়া গেইট, বুড়ির দোকান, চাইনীপাড়া এলাকায় মাদকের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।