ক্ষমতার অপব্যবহার আবাসিক এলাকার প্লটকে বাণিজ্যিক প্লট হিসেবে ব্যবহার এবং অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৭১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত ও সাবেক গৃহায়ণ, গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রথম মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার আসামির মধ্যে রয়েছেন চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদ, ছেলে রাহীব সাফওয়ান শরাফত চৌধুরী, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান, ডাইনেস্টি হোমস লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান এস কে মেহেদী হাসান, ডালিয়া চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, সাবেক এমডি রিমন কর্মকার, সাজিদ হক ও আমনি নাওয়ার চৌধুরী।
দ্বিতীয় মামলায় আসামি করা হয়েছে চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে। এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।
প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে এবং প্রতারণার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না মেনে ডাইনেস্টি হোমস লিমিটেডের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের ভবন ভাড়া করতে চুক্তি করে। এরপর গুলশান-২ এলাকার সিইএন (ডি) ব্লকের ১০২ ও ১০৩ নম্বর রাস্তায় অবস্থিত ২২/এ নম্বর প্লটে ২০ তলা ভবন ফাইন্যান্স স্কয়ারে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখা স্থানান্তর করা হয়। এভাবে কমপক্ষে ১৪ কোটি ৭ লাখ টাকা অগ্রিম গ্রহণ এবং ভবন নির্মাণ ব্যয় বাবদ আনুমানিক ২ কোটি টাকাসহ মোট প্রায় ৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে।
দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা একে অন্যের সহায়তায় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের বিধি লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ আবাসিক প্লটকে বাণিজ্যিক প্লটে রূপান্তর করেন। তৎকালীন মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন তাঁর পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে গুলশান এলাকার ওই আবাসিক প্লটকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমতি দেন। এতে ন্যূনতম ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা অবৈধভাবে আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের আগস্টে নাফিজ সরাফতের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল পদ্মা ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়।