📝 রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে আজ অনুষ্ঠিত হলো ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ উপলক্ষে এক ঐতিহাসিক সমাবেশ। এই অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে “জুলাই ঘোষণাপত্র” পাঠ করেন।
এই ঘোষণাপত্রটি ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে প্রণীত হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
কী আছে জুলাই ঘোষণাপত্রে?
জুলাই ঘোষণাপত্রে ২৮টি ধারায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামের ধারাবাহিকতা তুলে ধরা হয়েছে। এটি মূলত রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা, একদলীয় শাসন, ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের প্রামাণ্য দলিল।
প্রধান ঘোষণাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি এবং শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণার দাবি।
রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংস্কারের অভিপ্রায়।
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের স্বীকৃতি।
টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশ সুরক্ষার অঙ্গীকার।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই ঘোষণাপত্র?
এই ঘোষণাপত্র শুধু অতীতের ভুলের স্বীকৃতিই নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি দিকনির্দেশনা। এতে বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা—একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত, শোষণবিহীন, বৈষম্যহীন, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে।
এটি দাবি করে যে, একদলীয় শাসনের বিপরীতে জনগণ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রক্ত দিয়েছে এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে তা চূড়ান্ত রূপ পায়। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যা বর্তমানে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ঘোষণাপত্রে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তাই ঘোষণাপত্রে একটি নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে ভবিষ্যৎ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ঘোষণাপত্র নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী দলিল। এটি জনগণের ন্যায্যতা, প্রতিরোধ, আশা ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিনিধিত্ব করে। এখন দেখার বিষয়—এটি বাস্তবে কতটা কার্যকর হয় এবং কতটা জনসমর্থন লাভ করে।🚦
📰আরো পড়ুন👉◾রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস