📝 বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কিছু নাম যুগ পেরিয়ে আলো ছড়ায়—তেমনই একটি নাম অভিনেত্রী সুচরিতা। যাঁর আসল নাম বেবি হেলেন, শুরু করেছিলেন অভিনয় জীবন ১৯৬৯ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে। এরপর দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য স্মরণীয় ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। তাঁর অভিনয়ের গাম্ভীর্য, সংলাপপ্রয়োগ, আবেগময় অভিব্যক্তি তাঁকে পৌঁছে দেয় কিংবদন্তির আসনে।
সুচরিতার ব্যক্তিগত জীবনও ছিল একরকম রূপালী পর্দার নাটকীয় গল্পের মতো। প্রথম বিয়ে হয়েছিল চিত্রনায়ক জসিমের সঙ্গে। দুজনের জুটিও একসময় ছিল দর্শকপ্রিয়। তবে বাস্তব জীবনের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। পরে তিনি বিয়ে করেন চলচ্চিত্র প্রযোজক কেএমআর মঞ্জুরকে। সেই সম্পর্কেও নানা চড়াই-উতরাই পার করে শেষমেশ বিচ্ছেদ ঘটে।
তবে এইসব উত্থান-পতনের জীবনগাথা কখনও তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বরং অদম্য মনোবল ও একাগ্রতা নিয়ে তিনি বারবার ফিরে এসেছেন পর্দায়, উপহার দিয়েছেন শ্রেষ্ঠ অভিনয়।
এই কিংবদন্তি অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য তাঁর মেয়ে স্নেহা। চলচ্চিত্র বা মিডিয়ার গ্ল্যামার নয়, বরং জ্ঞান, শিক্ষা ও আদর্শিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী স্নেহা। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি পাড়ি জমান বিদেশে, এবং ফিরেও আসেন সাফল্যের মুকুট নিয়ে। বর্তমানে তিনি ঢাকার বারিধারায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। নিঃসন্দেহে, তিনি আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়।
সুচরিতার জীবনের গল্প যেন এক সম্পূর্ণ সিনেমার মতো—নাটকীয়তা, প্রেম, সংগ্রাম, সাফল্য এবং অবশেষে একজন মা হিসেবে সন্তানের গর্বে প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া। দুই প্রজন্ম—সুচরিতা ও স্নেহা, দুই ভিন্ন অঙ্গনে নিজের পরিচয়ে দীপ্তিমান।
এই গল্প শুধু একজন অভিনেত্রীর নয়, এটি এক নারীর সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবি—যেখানে মা ও মেয়ের আত্মপরিচয়ের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে নারীর ক্ষমতায়নের নিখুঁত দৃষ্টান্ত। তথ্যসূত্র
📰আরো পড়ুন:☞ চট্টগ্রামে অক্সিজেন এলাকায় সেতু ভেঙে দুই ভাগ, যানজটে দুর্ভোগ